দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ

Posted on October 15, 2019

সম্পাদকীয়: দেশের শিক্ষায় গত কয়েক বছরে বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়েছ। বর্তমান সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে ইতোপূর্বে জাতীয় পে-স্কুল ঘোষণা ও ব্যাপক প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তিকরণ সাফল্যের বড় প্রমাণ। এর শুরুটা হয়েছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই। ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রযাত্রার শুভ সূচনা করেছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে লক্ষাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে সরকারি চাকরি প্রদান। যাতে এসব শিক্ষক ও হাজারো শিক্ষক পরিবার সামাজিক ও আর্থিক মর্যাদা লাভ করে।

এবার শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে সহজলভ্য করতে আরেক যুগান্তকারী এবং স্মরণযোগ্য সিন্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিপূর্বে বিভিন্ন পর্যায়ে উপবৃত্তি ছাড়াও মেধাবৃত্তি ও মিডডে মিল চালুর এবার দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অর্থ্যাৎ দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীকে একটি শ্রেণীতে টিউশন ফি দিতে হবে না। দেশের প্রতিটি ঘরেই রয়েছে শিক্ষক না হয়তো শিক্ষার্থী। সরকারের এ অবস্মরণীয় উদ্যোগকে আমরা সু-স্বাগত জানাই।

শিক্ষায় টেকসই উন্নয়ন, ভিশন-২০৪১ অর্জনের লক্ষে ঝরেপড়া রোধ এবং মান অর্জনেই অবৈতনিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য। এজন্যই পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যেই প্রথম ধাপ হিসেবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণীর লেখাপড়া অবৈতনিক সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ষষ্ঠ শ্রেণীতে এ সুযোগ দেয়া হবে। পরের বছর সিন্ধান্তটি সপ্তম শ্রেণীতে বাস্তবায়ন করা হবে।

এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রতি বছর একটি শ্রেণী অবৈতনিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হবে। সেই হিসেবে ২০২৬ সালের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু হবে। একই সাথে বাড়ানো হবে উপবৃত্তির পরিমাণ। বর্তমানে প্রতিটি শ্রেণীতে ৪০ শতাংশ উপবৃত্তির আওতায় থাকলেও তা বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার সুযোগ থাকলেও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদেও টিউশন ফি দিয়ে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় অবৈতনিক শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই এ সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আরও জানা যায়, যে পরিমাণ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে তাদরে মধ্যে ১০ শতাংশ ছাত্র, বাকিরা ছাত্রী। নতুন সিন্ধান্ত অনুযায়ি ১৫ শতাংশ ছাত্র এবং ৪৫ শতাংশ ছাত্রী উপবৃত্তি পাবে। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ এবং শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষর্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে সরকারের সুদূরপ্রবাসী অভিপ্রায়কে আমরা স্বাগত জানাই। সরকারের এই সুন্দর গঠনমূলক কাজের ধারা অব্যাহত থাকুক।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার রক্ষায় কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন