প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে নির্মূল হবে দুর্নীতি, এগিয়ে যাবে দেশ

Posted on October 2, 2019

দুর্নীতি-অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতার সঙ্গে জড়িত থাকলে দলের নেতাদেরও ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের প্রকল্পসমূহের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা হলে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যেত। এ কারণে ফাঁকফোকর কোথায় এবং কারা উন্নয়ন প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত করছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দুর্নীতির প্রশ্নে সরকার জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছে, অসৎ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ভোগবিলাসিতায় এত টাকা কীভাবে এল তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে।

বর্তমানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার নিউইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় এসব কথা বলেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী এই অবস্থানকে প্রশংসা করছি এবং তার উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি। এই ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সফল হলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আামি একটা কথা স্পষ্ট বলতে চাই, এই অসৎ পথ ধরে কেউ উপার্জন করলে, অনিয়ম, উচ্ছৃঙ্খলতা বা অসৎ কাজে যদি ধরা পড়ে, তবে সে যেই হোক না কেন, আমার দলের হলেও ছাড় হবে না, এর বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হবে।

এছাড়া, দুর্নীতির পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, সেটাও অব্যাহত থাকবে। এই মাদক একটা পরিবার ধ্বংস করে, একটা দেশ ধ্বংস করে। এর সঙ্গে কারা আছে সেটাও আমরা খুঁজে বের করব। বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক দূর করে বাংলাদেশের মানুষকে আমরা উন্নত জীবন দিতে চাই। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস যে কেবল বাংলাদেশের সমস্যা না, গোটা বিশ্বের জন্যই যে এটি একটি হুমকি, সে কথাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এখন দেশের উন্নতির জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দরকার।

দুর্নীতি অনিয়ম সভ্যতার একটি কালোদিক। এটা অনাদিকাল ধরে চলে আসছে। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে রচিত কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ৩৬ প্রকার তহবিল তছরুফের কথা উল্লেখ আছে। সুলতানি আমল, মোঘল আমল এমনকি ইংরেজ আমলেও সমাজে দুর্নীতি ছিল। কিন্তু সেই দুর্নীতি খুবই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ছিল। দুর্নীতিবাজরা সমাজে ঘৃণিত ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা উত্তরকালে দুর্নীতির বাধ ভেঙে যায়। একশ্রেণির মানুষ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয় এবং দুর্নীতি কিছুটা প্রতিষ্ঠানিক রূপ পেয়ে যায়। সমাজে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে এবং দুর্নীতিবাজরা বড় গলা করে কথা বলে। বঙ্গবন্ধু বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তিনি ‘চোরের খনি’ পেয়েছেন বলে আশপাশের লোকদের সতর্ক করেছিলেন। তিনি ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তাদের “ভূড়েল’ বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, ‘মনে রেখো ওই কৃষকের পরিশ্রমের টাকায় তোমাদের বেতন হয়। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই তাকে হত্যা করা হয়।বাংলাদেশের অতীতের সরকার প্রধানরা ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো কথাই বলেননি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত দেশ পৃথিবীতে নেই। কিন্তু যদি এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঘুষ দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা যায়, সেটা জাতির জন্য বড় অর্জন হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের সফল্যও কামনা করছি।

পেঁয়াজের সিন্ডিকেট বাণিজ্য থামাতে হবে