আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : দোড়গোড়ায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। রহমতের ১০ দিন শেষে শুরু হয়েছে মাগফেরাত। এরপর নাজাতের ১০ দিন শেষ হলেই মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। বাকি আর ১৫দিন। ঈদ মানেই আনন্দ। আর এ আনন্দ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় নতুন পোশাক। তাই তো ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, নতুন নতুন পোশাক কিনতেমার্কেটে ওদর্জির কাছে ছুটে যাচ্ছে সবাই। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মনের মতো ডিজাইনের পোশাক কিনতে তৈরী পোশাকের দোকানে এবং নিজের পছন্দ মতো পোশাক বানাতে মানুষ ভিড় করছেন দর্জিপাড়ায়। ঈদুল ফিতরের ঈদ আনন্দের অন্যতম উপকরন নতুন পোষাক। আর তাই রোজা শুরুর সাথেসাথেই কেনাকাটার মধ্যদিয়ে ঈদ প্রস্তুতি শুরু হয়। রোজার প্রথম দিকে বিপনীবিতান গুলোতে ক্রেতাদের খুব বেশী উপস্থিতি না ঘটলেও গত দুই দিন ধরে শহরের মার্কেটসহ বড় বড় বিপনী বিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রেতাদের বিশেষ আকর্ষন করতে বিপনীবিতান গুলোতে লাইটিং করা হয়েছে। শহরের জনস্রোতের কারনে ভিড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ, শহরের বাইরে থেকে শহর মুখি হওয়ার প্রবনতা অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশী। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্রেতারা মাইক্রো, ইজিবাইক, মহেন্দ্র এবং মোটরসাইকেল চেপে আসছে শহরের বিপনী বিতান গুলোতে।এ বছর রোজার শুরু থেকে প্রতিটা মার্কেট বিরতিহীনভাবে খোলা থাকায় গত দুই বছরের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে, ক্রেতারাও পুরো রমজান মাস মার্কেটগুলো খোলা থাকায় ধীরেসুস্থে কেনাকাটা করতে পারছেন বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিছ, শাড়িতে মানুষের আগ্রহ বেশি। যদিও দাম নিয়ে ছিল ক্রেতাদের অভিযোগ। তুলনামূলক দাম একটু বেশি বলে জানান তারা। এবারের ঈদে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিছ, শাড়ির পাশাপাশি তরুণীদের মধ্যে ‘গারারা’ ও ‘সারারা’র চাহিদা বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি ভারতীয় পোশাকের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ঠ।
শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, এবারের কেনা কাটায় ক্রেতারা কেবলমাত্র নামীদামীমার্কেটে বা বিপনী বিতান গুলোতে যাচ্ছে তা নয়, শহরের সকল এলাকার মার্কেট ফুটপথে, অস্থায়ী জামা কাপড়ের মার্কেটেও ভিড় জমাচ্ছে। মার্কেটে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতি বেশি। ক্রেতারা শুধুমাত্র নতুন পোষাকের দিকে ঝুকছে তা নয়, স্যান্ডেল, জুতা, প্রসাধানী, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, আসবাবপত্র সবই চাহিদার ক্ষেত্র হিসেবে দেখা যাচ্ছে। দর্জির দোকান গুলোতে ইতিমধ্যে নতুন অর্ডার নিতে অনিহা দেখাচ্ছে, মেয়েদের পোশাক যেমন বিক্রি হচ্ছে তদ্রুপ পুরুষদের পাঞ্জাবীর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পচ্ছে।
একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত দুইটি ঈদ কেনাকাটায় তেমন ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল না মহামারী করোনার কারনে কিন্তু এবার সেই প্রতিকুল পরিস্থিতি নেই বিধায় ক্রেতারা ব্যাপক ভাবে আসছে। এবার লাভও বেশি হবে বলে জানান বিক্রেতারা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকার রাসেল ও তার স্ত্রী কাকলী খাতুন আসেন ঈদের কেনাকাটা করতে, তারা বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এবারে দাম অনেক বেশি নেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা একদামে বিক্রি করছে তাদের কাছ থেকে সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। আবার দামদর করে কিনতে গেলেও সমস্যা। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে বসছে। লজ্জায় আর কতটুকু কমানো সম্ভব।
চুয়াডাঙ্গা পুরাতন গলির সওদাগর ষ্টোরের (বস্ত্রালয়) মালিক চাঁদ সওদাগর কলেন, করোনাকালীন দু’বছরে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এবার হয়তো সেই সমস্যা নেই। বর্তমানে ঈদের বেঁচা-বিক্রি শুরু হয়েগেছে। আশাকরি এবার লাভের মুখ দেখবো। থ্রি-পিচ, থানকাপড়, উন্ডিয়ান জর্জেট শাড়ি, উন্ডিয়ান চুন্নি কাতান, দেশি সুতি শাড়ির চাহিদা বেশি।
চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটের ফ্যাশন সুজ’র মালিক রেদওয়ানুর রহমান মালিক বলেন, রোজার প্রথম থেকেই ঈদের বিক্রি শুরু হয়েছে। করোনায় যে ক্ষতি হয়েছে আশা করি এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
সমবায় নিউ মার্কেটের রংধনু গিফ্ট গার্ডেনের মালিক মিজানুর রহমান জুয়েল বলেন, যেহেতু ঈদের আর বেশি দেরি নেই। সে কারনে পোশাকের পাশাপাশি মানুষ যার যার ঘর সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই সাথে নিজেকে সাজাতে বিভিন্ন বয়সের নারীরা দোকানে আসছেন। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার বিক্রির পরিমান একটু বেশিই মনে হচ্ছে।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
দোড়গোড়ায় কড়া নাড়ছে ঈদ: কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা https://corporatesangbad.com/23311/ |