চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

Posted on April 6, 2023

মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভেতর এক যুবককে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে৷ এই ঘটনায় সেখানকার এক নিরাপত্তা প্রহরীকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল দিবাগত রাতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভেতর নির্মাণাধীন ভবনে চুরির অভিযোগে এক যুবককে আটক করে সেখানকার নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন। হাত-পা বেঁধে রাতভর মারধর করা হয় ওই যুবককে। পরে ৩ এপ্রিল সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে৷ এরপর এক রিকশাচালক সেখান থেকে শহরের গাড়িরমাঠ এলাকায় রেখে আসেন ওই যুবককে। পরে সেখানকার ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন তাকে। পরে ৪ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান তিনি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, চুরির অভিযোগে হাত পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয় তাকে। মারধরের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ঘটনায় সেখানকার নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুরকে আটক করা হয়েছে। আদালতে তিনি মারধর করার দায় স্বীকার করেছেন। তবে নিহত ওই যুবকের স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানান ওসি।

ঘটনার কারণ জানতে শহরের কয়েকটি স্থানে যায় টিটিএন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে রিকশাযোগে নিহত যুবককে প্রথমে যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই গাড়ির মাঠ এলাকায় গিয়ে তার পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কেউ তার সঠিক পরিচয় দিতে পারেননি। তবে অনেকে দাবী করেন, তিনি সারাদিন ভাঙারী কুড়িয়ে ফুটপাতে রাতযাপন করতেন। তাকে সেদিন মুমূর্ষু অবস্থায় দেখে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পাউন্ডের ভেতর নতুন একটি ভবন নির্মাণ হচ্ছে। সেটি নির্মাণে ঠিকাদারির দায়িত্ব পেয়েছেন টার্ন বিল্ডার্স। খুনে অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুর টার্ন বিল্ডার্সের নিয়োগকৃত ছিলেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে এবং তাদের নিজস্ব অফিসে গিয়েও টার্ন বিল্ডার্সের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে উধাও সবাই।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ওই যুবকের নাম মহিউদ্দিন। তিনি লালমনিরহাটের সৈয়দনগর এলাকার বাসিন্দা বলে প্রাথমিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মিজানসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন।