সাতক্ষীরায় বাঁধার মুখে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণ কাজ

Posted on April 5, 2023

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহরে বিএনপির নেতার বাঁধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণের কাজ। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে ইউনিয়নের বেরিবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শাহাজাহান আলী ধুলিহর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি একই এলাকার ঈমান আলীর ছেলে।

ধুলিহর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ধুলিহর মৌজায় বেড়িবাড়ি এলাকার মৃত তারকনাথ ঘোষের ছেলে যতীন্দ্রনাথ ঘোষ ও ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষের নামে ১০২৬ খতিয়ানের ১০১২৪ দাগে ১ একর ১ শতক জমি ছিল। তবে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তারা ভারতে চলে যাওয়ায় এবং দেশে তাদের কোন ওয়ারেশ না থাকাতে ১৯৯২ সালে ওই জমি ১/১ খাস খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ড হয়। সরকারের নামে রেকর্ড থাকলেও কোনপ্রকার ডিজিআর ব্যতিত ক্ষমতা বলে ওই জমি নিজের দখলে রাখেন শাহজাহান আলী।

পরবর্তীতে ওই জমিতে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসন। সেই মোতাবেক জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওই খাস খতিয়ানের জমির সীমানা নির্ধারন করা হয় এবং মুজিববর্ষের ঘর তৈরির জন্য সেখানে নির্মাণ সামগ্রী পাঠানো হয়।কিন্ত গত মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) সকালে ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, মিস্ত্রী ও শ্রমিকদের নিয়ে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণ করতে গেলে বিএনপি নেতা শাহাজান আলীসহ তার পরিবারের সদস্যদের বাঁধার মুখে ঘর নির্মাণ না করে ফিরে আসতে বাধ্য হন।

অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীর অসহযোগিতার কারনে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।এলাকাবাসী জানায়, বেতনা নদী খননের পর ধুলিহরের অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের আবাসস্থল হারিয়েছে। তারা অপেক্ষায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিবেন। ওই খাস খতিয়ানের জায়গাতে যেন আবাসস্থল হারানো পরিবারদের মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দেয়া হয় সে কারনে সংশ্লিষ্ট মহলকে বিষয়টি জানানো হয়েছিলো। এবং তারা আশ্বাস্ত করেছিলো ওই খাস জমিতে যতোটা সম্ভব তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।

স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে উপর মহলের নির্দেশনা অনুযায়ী খাস খতিয়ানের ওই জমিতে মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণ করতে গেলে শাহাজাহান আলী ঘর নির্মাণ কাজে বাঁধা দেন। পরে শাহাজাহান আলীর পরিবারের সদস্যরা সরকারি কর্মকর্তা, মিস্ত্রী ও শ্রমিকদের সাথে আক্রমণমূলক আচরণ করতে থাকেন। সে সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় ফিরে আসতে বাধ্য হন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরীর নিকটে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনাকে পাঠিয়েছে কে? ইউএনও নাকি নায়েব? আমিতো বলেছি বিষয়টা আমি সমাধান করে দিবো। তাহলে সংশ্লিষ্ট মহল এতো বাড়াবাড়ি না করলেও পারতো জানিয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাতে গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় তিনি বলেন, আপনাদের সাংবাদিকদের কোনকিছু করা লাগবে না। আমি যথেষ্ট। আমি বিষয়টা সমাধান করবো।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক জানান, প্রথমিক ভাবে একটু ঝামেলা হয়েছিলো তবে সেটি সমাধান হয়ে গিয়েছে আগামীকাল শ্রমিক পাঠিয়ে কাজ করা হবে।এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, আমরা সরকারি নিয়ম নীতি মেনে কাজ করবো। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামীকাল থেকে কাজ শুরু করা হবে।