৮১ বছরের যাত্রা শেষ করলো বিবিসি বাংলা রেডিও

Posted on January 1, 2023

অনলাইন ডেস্ক : বিবিসি বাংলার রেডিও সার্ভিস দীর্ঘ ৮১ বছরের পথ পাড়ি দিয়ে তার যাত্রা শেষ করেছে ২০২২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর। বিবিসি বাংলা বেতারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১১ই অক্টোবর ১৯৪১ সালে। তখন প্রতি সপ্তাহে লন্ডন থেকে বাংলায় নিউজলেটার অনুবাদ করে পড়ে শোনানোর মধ্যে দিয়ে শুরু হয় এই রেডিও সম্প্রচার।

গোড়াপত্তন যেভাবে
বাংলা সম্প্রচারের পুরনো রেকর্ডিং থেকে গোড়ার দিনগুলো সম্পর্কে জানা যায় অনুষ্ঠান শুরুর সেই সময়ে ইংরেজিতে লেখা কথিকা প্রতি সপ্তাহে অনুবাদ করে পড়ে শোনাতেন ড. সুধীন ঘোষ, যিনি ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক।

ইংরেজিতে কথিকাগুলো লিখতেন প্রবন্ধকার, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক এরিক ব্লেয়ার, সাহিত্য জগতে যিনি সুপরিচিত ছিলেন জর্জ অরওয়েল নামে।

যেসময় বিবিসির সাপ্তাহিক বাংলা সম্প্রচার শুরু হয় তখন ইউরোপ জুড়ে বাজছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণদামামা। জর্জ অরওয়েলের বার্তা লিপির প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে যুদ্ধ প্রসঙ্গ ছাড়াও থাকত সাহিত্য, উপনিবেশের অন্য জায়গার পরিস্থিতিসহ অন্যান্য বিষয়াবলীও।

তবে বিবিসি বাংলা রেডিওর ইতিহাস থেকে জানা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার লক্ষ্য নিয়েই তখন শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা রেডিওর যাত্রা।

কারণ সেই সময় মিত্র পক্ষের হয়ে লড়াই করছিল ভারতীয় উপমহাদেশের লক্ষ লক্ষ সৈন্য। তাই অক্ষশক্তি জার্মানি, জাপান ও ইতালির প্রচারণায় যেন উপমহাদেশের মানুষ বিভ্রান্ত না হন, সেটা নিশ্চিত করাই ছিল মূল লক্ষ্য।

এরপর ১৯৪৪ সালে সপ্তাহে একটির বদলে চালু হয় দুটি করে ১৫ মিনিটের কথিকাভিত্তিক অনুষ্ঠান।

প্রথম ম্যাগাজিন অুনষ্ঠান
ওই বছরই যুদ্ধের মধ্যে পূর্ণকালীন কর্মী হিসাবে ভারত থেকে এসে যোগ দেন কমল বোস আর রেখা আলি। তাদের যোগদানের পর ৩১শে ডিসেম্বর ১৯৪৪ থেকে সপ্তাহে দুটির বদলে একটি ৩০ মিনিটের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান চালু হয় বিচিত্রা নামে, যা ছিল নানা বিষয়ের পাঁচমিশালি এক অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানের পরিচিতি সঙ্গীত ছিল ভারতের আজকের জাতীয় সঙ্গীত জনগণমন গানটির সুর।

পরে ১৯৪৭ সালে গানটি ভারত জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করার পর বিচিত্রার পরিচিতি সঙ্গীতটি বদল করা হয়। ভারত ১৯৪৭ সালে ভাগ হবার পর ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে পূর্ব পাকিস্তানের শ্রোতাদের জন্য সপ্তাহে আর একটি ৩০ মিনিটের বাংলা অনুষ্ঠান শুরু হয় আঞ্জুমান নামে, যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ছিল মহিলাদের জন্য একটি আলাদা অনুষ্ঠান- পরিচালনা করতেন পিয়ারী আপা ছদ্মনামে শরিফা আলম।

আঞ্জুমানের মূল টার্গেট ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি শ্রোতারা আর সেই অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার সাথে ব্যবহৃত হতো অনেক ঊর্দু শব্দ। ভারতীয় বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বাংলা অনুষ্ঠান বিচিত্রা আর পাকিস্তান বিভাগের অন্তর্গত আঞ্জুমান আলাদা অনুষ্ঠান হিসাবে চালু ছিল ১৯৬৯এর জুন মাস পর্যন্ত।

আজকের বাংলা বিভাগ
এর আগে অবশ্য ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময় থেকে দুই বিভাগের যৌথ প্রযোজনায় চালু হয় প্রতিদিন সকালে ১৫ মিনিটের বাংলা অনুষ্ঠান- প্রভাতী এবং সেখানেই প্রথম প্রচারিত হয় বিশ্বসংবাদ আর সংবাদ ভাষ্য।

তবে ১৯৬৯ সালটা ছিল বিবিসি বাংলার রেডিওর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই বছরই জুন মাসে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলা সেকশন দুটি এক হয়ে পরিণত হয় আজকের বাংলা বিভাগ।

সেই সম্মিলিত বাংলা বিভাগ যাত্রা শুরু করে ১৯৬৯এর দোসরা জুন- ১৫ মিনিটের সান্ধ্য অনুষ্ঠান প্রবাহ নাম দিয়ে।

বিবিসির খবরের ওপর শ্রোতাদের নির্ভরশীলতা আর বিবিসি বাংলা রেডিওর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়। মানুষ তখন যুদ্ধের সঠিক খবরের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করত বিবিসি বাংলার ওপর।
এই যুদ্ধের সময় খবর প্রচারের ওপর পাকিস্তান সরকারের সেন্সর ব্যবস্থা এবং সাংবাদিকদের ওপর নানারকম চাপ ও হুমকির মুখে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বিবিসি বাংলা তখন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে বাংলা অনুষ্ঠানের সময় কখনও বেড়েছে কখনও কমেছে। যুক্ত হয়েছে নানাধরনের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। ছোটদের আসর, বিজ্ঞান ও খেলাধুলার অনুষ্ঠান, মেয়েদের জন্য ম্যাগাজিন, নাটক, গানবাজনার আয়োজন।

নিয়মিত বিশ্বসংবাদ থাকলেও তা ছিল মোটামুটি সংক্ষিপ্ত আর সংবাদভাষ্য থাকলেও তাতে প্রাধান্য পেত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবরাখবর। ১৯৮৮ সালে রাতের বেলায় আধ ঘণ্টার নতুন আর একটি অধিবেশন -যেটি আজকের পরিক্রমা – সেটি চালু হলেও সেই অনুষ্ঠানের মেজাজও ছিল মোটামুটি একই ধাঁচের।

সংবাদধর্মী সম্প্রচার
এই ধারার বদল ঘটে নব্বইয়ের দশকে। সেসময় থেকে বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠানের মূল উপজীব্য হয়ে ওঠে সংবাদ, সাময়িক প্রসঙ্গ আর সংবাদভিত্তিক নানা প্রামাণ্য আয়োজন।

এই পরিবর্তনের সময় বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী। তিনি বলছেন, সেসময় চালানো শ্রোতা জরিপে দেখা যায় বিবিসি বাংলার সিংহভাগ শ্রোতা সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণ শোনার পর রেডিও বন্ধ করে দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে প্রচারিত সামজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় ভিত্তিক ফিচারগুলোর জনপ্রিয়তা কমছে।

“ওই সময় অর্থনৈতিক কারণে সীমিত জনবল এবং সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের দিকটিতে বিবিসি বিশেষভাবে নজর দিচ্ছিল। ফলে কতজন শ্রোতা কী শুনতে চাইছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় ধরনের বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়,” জানান ড. আলী।

একই সময়ে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে তখন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে আসেন জন টুসা। সেসময় শীতল যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে নানাধরনের পরিবর্তন চলছিল।

সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, পৃথিবীর নানা অংশে তখন গৃহযুদ্ধ, আন্তঃরাষ্ট্রীয় যুদ্ধ, সংঘাতের মত ঘটনাগুলো সামনে আসতে থাকে। এসব ঘটনা সম্পর্কে শ্রোতাদের জানার আগ্রহ বাড়ে আর তার ফলশ্রুতিতে বদলে যায় সাংবাদিকতার ধারা।

“সংবাদের পরিমাণ, পরিমাপ, মাত্রা সবকিছুই অনেকখাানি সম্প্রসারিত হয়ে যায়, এবং বিবিসিকে তার সাথে তাল মিলিয়ে সম্প্রচারে বেশ কিছুটা রদবদল করতে হয়। বদলে যায় বিবিসি বাংলা রেডিও -অনুষ্ঠানগুলো হয়ে ওঠে সংবাদধর্মী।”

বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার সংবাদভিত্তিক হয়ে ওঠার পরও নানা সময়ে বিবিসি বাংলার পথচলায় বিভিন্ন প্রয়োজনে নতুন অনুষ্ঠান যুক্ত হয়েছে, আবার এক সময় সেগুলো বন্ধও হয়ে গেছে। যেমন দুপুরের অধিবেশন, এফএম প্রচার তরঙ্গে হালকা মেজাজের সম্প্রচার।

এর মধ্যে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে যোগ হয় সকালের দ্বিতীয় অনুষ্ঠান প্রত্যুষা। এরপর ২০১৮য় প্রভাতী আর ২০২০তে প্রত্যুষাও বন্ধ হয়ে যায়। টিকে থাকে সন্ধ্যের অধিবেশন প্রবাহ আর রাতের অনুষ্ঠান পরিক্রমা।

নতুন চ্যালেঞ্জ
সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে বিগত কুড়ি বছরে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং এসব চ্যালেঞ্জ বিবিসি বাংলাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

বিবিসি বাংলার বর্তমান সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলছেন, “বাংলাদেশ এবং ভারত, দু’দেশেই রাজনীতিকরা অনেক অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছেন। তারা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চান না, অনেক ক্ষেত্রে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে বিভিন্ন আইন ব্যবহার করেন।”

এটা সাংবাদিকদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ অনেকেই আর মিডিয়ার সাথে কথা বলতে চান না। আবার ধর্মীয় গোষ্ঠিগুলোর কারণেও সাংবাদিকতা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

“এসব শুধু স্থানীয় গণমাধ্যম নয়, বিবিসির মত বিদেশী মাধ্যমের ওপরও চাপ সৃষ্টি করে এবং সেই চাপ মোকাবেলা করেই আমাদের সাংবাদিকদের কাজ করতে হয়,” বলেন সাবির মুস্তাফা।

“তবে সবচেয়ে বড় কথা, সে কাজ বিবিসির সম্পাদকীয় নীতিমালার সাথে কোন আপোষ না করেই করা হয়।”

বাড়তি মাত্রা
প্রতিদিনের খবর প্রচারের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ঘটনাবলীর কভারেজে বিবিসি বাংলা সবসময়ই শ্রোতাদের জন্য একটা নির্ভরযোগ্য খবরের উৎস হয়ে থেকেছে।

নির্ভীক ও নিরপেক্ষ রিপোর্টিংএ বিবিসি বাংলা রেডিও সবসময়ই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটা বাড়তি মাত্রা যোগ করার চেষ্টা করেছে।

যেমন, ১৯৯৫ সালের শেষ থেকে বাংলাদেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এরপর ৯৬ সালে ছয় মাসের মধ্যে দুদফা নির্বাচনের কভারেজ যেমন আমাদের সাংবাদিকতার জন্য একটা মাইলফলক তৈরি করেছিল, তেমনি পরবর্তীতে কিছু ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ঘটনার খবর পরিবেশন বিবিসি বাংলাকে রেডিও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিশেষ স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল।

এর মধ্যে ছিল ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি বৈঠা আন্দোলনের কভারেজ। ছিল ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের খবর।

বাংলাদেশে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি সামরিক বাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপে রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা পরিষদের পদত্যাগ ও জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে পরোক্ষ সামরিক শাসন জারির সময়টা ছিল বিবিসি বাংলার সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জের সময়।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি
এখানে আরেকটা অনুষ্ঠানের কথা না বললেই নয়, যে অনুষ্ঠান বিবিসি বাংলার রেডিও ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেটি হল শ্রোতা জরিপের ভিত্তিতে তৈরি অনুষ্ঠান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?

এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা জানান, “আমার ২৪ বছরের বিবিসি জীবনে এটা ছিল সত্যিকার অর্থে সাড়া জাগানো অনুষ্ঠান।

“আমরা যখন প্রথম এই জরিপের ঘোষণা শুরু করি, তখন দু’একজন শ্রোতা চিঠি লিখে প্রশ্ন করেন, জরিপের ফলাফল প্রচার করার সাহস আমাদের থাকবে কিনা? আরেকজন অভিযোগ করেন, এধরনের জরিপ করে একজন মহা বাঙালির বিপরীতে আরেকজনকে বাছাই করতে বলা ঠিক হচ্ছে ন।”

তবে, ২০০৪ সালের ২৬শে মার্চ যখন ২০ জনের জীবনী নিয়ে অনুষ্ঠানমালা শুরু হল, তখন থেকেই বাংলাদেশের মিডিয়ায় এই জরিপ নিয়ে হাল্কা আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। প্রথম দিন থেকেই একটি পত্রিকা জরিপের ফলকে খবর হিসাবে পরিবেশন শুরু করেছিল।

কিন্তু যখন তালিকার ১০/১১ নম্বরে আমরা পৌঁছই, তখন থেকে সম্ভবত ১২-১৪টি পত্রিকায় প্রতিদিন এই জরিপ নিয়ে তৈরি আমাদের গোটা অনুষ্ঠান ছাপানো হতে থাকে। এই সাড়া ছিল অভাবনীয় এবং সবচেয়ে বড় আলোড়ন তৈরি হয় বাংলা নববর্ষের দিন, যখন তালিকায় এক নম্বর ব্যক্তি অর্থাৎ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির নাম ঘোষণা করা হয়।

“১৩ই এপ্রিল দু’নম্বরে রবীন্দ্রনাথের নাম ঘোষণার পর অনেক পত্রিকা অফিস থেকে আমরা ফোন কল পেতে থাকি। তারা বলেন ১৫ তারিখ যেহেতু কোন পত্রিকা বের হবে না, তাই আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির নাম আগেই জানিয়ে দিতে পার কিনা? আমি বলি – না। এই অনুষ্ঠান যেহেতু রেডিও শ্রোতাদের জন্য করা হচ্ছে, সুতরাং তারাই আগে জাানবেন ফলাফল,” বলেন মি. মুস্তাফা।

পহেলা বৈশাখ, ১৪ই ভোর সাড়ে ছ’টায় বিবিসি বাংলা প্রভাতী অধিবেশনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে শেখ মুজিবের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৬তারিখে প্রায় প্রতিটি পত্রিকায় এই খবর শিরোনামে আসে।

“এধরনের আলোড়ন আর কোন অনুষ্ঠান নিয়ে হয়েছে বলে আমার জানা নেই,” বলেন সাবির মুস্তাফা।
গত ৮১ বছর রেডিওতে বিবিসি বাংলা বিশেষ করে বাংলাদেশে, সেইসঙ্গে ভারতের মূলত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম আর ত্রিপুরায় লক্ষ লক্ষ শ্রোতার চাহিদা মিটিয়েছে।

সম্পাদকীয় নীতিতে অটল থেকে বিশ্বমানের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছে।

কিন্তু এই সময়ের মধ্যে পরিবর্তনেরও একটা বিরাট ঢেউও এসেছে– সেটা হল ডিজিটাল মিডিয়ার উত্থান- শ্রোতাদের চাহিদার বিবর্তন আর মিডিয়া প্রযুক্তির দ্রুত বদলে যাওয়া।

এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিবিসি বাংলা এখন শুধু রেডিও নয়, রেডিওর পাশাপাশি আছে টিভি আর বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।

সুদীর্ঘ ৮১ বছর বেতার শ্রোতাদের কাছে নির্ভরযোগ্য ও নিরপেক্ষ খবরের উৎস হয়ে থাকা বিবিসি বাংলার কণ্ঠ রেডিওতে স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে ২০২২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর। কিন্তু থামছে না বিবিসি বাংলার পথচলা। আগামীতে আমাদের পদচারণা নতুন আঙ্গিকে, নতুন মাধ্যমে, আর সেইসাথে নতুন উদ্যমে।

সূত্র-বিবিসি।