নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচনে রাষ্ট্রদূতরা অনিমন্ত্রিত, প্রবাসীদের ক্ষোভ

Posted on March 28, 2023

ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের একটি রাস্তা ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ -এর নামফলক উম্মোচন করা হয় রবিবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশের ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে। প্রায় দুইমাস ধরে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নামফলক উম্মোচনের দিনক্ষণ ঘোষনা দেওয়া হলেও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের কোন আমন্ত্রণই দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চলছে নানা গুঞ্জন। কেন তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এর জন্য কারা দায়ী বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দ নাকি নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কমিউনিটিতে চলছে মুখরোচক আলোচনা। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

জ্যাকসন হাইটসের রাস্তা ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে নামকরণ প্রস্তাবের দাবিদার জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ)এর অর্মুর্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানোর দায়িত্ব সিটি কর্তৃপক্ষের। এখানে আমাদের কিছুই করণীয় ছিল অনুষ্ঠান আয়োজনের সম্পুর্ণ বন্দোবস্ত করেছেন সংস্লিষ্ট কাউন্সিলম্যানরা। এটা তাদের দায়িত্ব কাকে আমন্ত্রণ জানাবেন। তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল বলে তারা মনে করছেন।

ওয়াশিটন ডিসি'র বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের একটি সূত্র জানিয়েছেন তারা নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের কোন আমন্ত্রণ পাননি এমনকি কোন বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি জানাননি।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার দপ্তরের জনৈক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। পরে প্রেস সেক্রেটারি নাসিরকে ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

নিউ ইয়র্কের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনিও নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ কিংবা বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের পক্ষ কোন আমন্ত্রণ পাননি। ফলে তিনি উক্ত অনুষ্ঠানে যাননি।
গত রবিবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন করেন জ্যাকসন হাইটস ও এলমহার্স্ট এলাকার নব নির্বাচিত সিটি কাউন্সিলম্যান উপমহাদেশীয় বংশোদ্ভুদ শেখর কৃষ্ণান। জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ)এর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। যথাযথ আমন্ত্রণ না পাওয়ায় নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের কোন সরকারি কর্মকর্তাগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

জ্যাকসন হাইটসের একটি রাস্তা ‘বাংলাদেশ স্ট্রিট’ নামে নামকরণের জন্য প্রায় এক বছর ধরে জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ) সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা নানাভাবে নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগসহ সামাজিক তৎপরতা চালিয়ে আসছেন কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাদের কাউকেই কোন রকম বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় প্রবাসীদের মাঝে নানা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয় সেখানে উপস্থিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত থাকলেও তাদেরকেও দু'টি কথা বলার সুযোগ দেননি আয়োজকবৃন্দ। এ ঘটনায় নিউ ইয়র্ক প্রবাসীরা হতবাক হয়েছেন। এমনকি জ্যাকসন হাইটসে বসবাস করেন না শ্রমিক সংগঠনের সাথে জড়িত এমন একজন ব্যক্তিকে দিয়ে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করা হয়। যা উপস্থিত প্রবাসীদের মাঝে নানা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ স্ট্রিটের নামফলক উম্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, স্টিভেন রাঘাব, কাউন্সিল মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ-রোজাস, অ্যাসেম্বলিম্যান স্টিভেন রাগা, কাউন্সিল মেম্বার লিন্ডা লি, জেবিবিএ'র বর্তমান সভাপতি হারুন ভুঁইয়া ও সাধারন সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, অপর জেবিবিএ'র সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাধারন সম্পাদক তারেক হাসান খানসহ শত শত বাংলাদেশি উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।