সিএস প্রফেশনের সার্টিফিকেট চাকরির প্রতিযোগিতায় প্রার্থীকে এগিয়ে রাখবে: শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন

Posted on November 19, 2018

মাহমুদুন্নবী জ্যোতি: এবারে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এর সিএস প্রফেশনের সার্টিফিকেট অর্জন করেন ৯১ জন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠানটির ৭ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয় সনদপত্র। কর্পোরেট সংবাদ কৃতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন তুলে ধরছে। আমাদের আজকের অতিথি শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন এসিএস।

দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও মিসেস শামসুন্নাহার হোসেন দম্পতির সন্তান শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেনের জন্ম ০৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৮০। বর্তমান কর্মস্থল, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার এন্ড ইনটারনাল আইটি অডিটর, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড। এক কন্যা সন্তানের জনক শরিফ দিলনেওয়াজ ২০১৪ সালের ১৪ই ডিসেম্বর সারমীন সোহেলীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

শিক্ষাগত জীবনে তিনি ১৯৯৬ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৮ সালে বগুড়ার সরকারি আযিযুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি, ২০০১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা কমার্স কলেজ) থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে বিএসসি এবং ২০০২ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে একই বিষয়ে এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৪ সালে ঢাকার বি.আই.বি.এম থেকে পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন্স, ২০০৯ সালে নর্থ সাউথ বিশ্বদিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে এমবিএ এবং ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে এম.আই.টি (আইটি), আই.আই.টি ডিগ্রী অর্জন করেন।

কর্পোরেট সংবাদের মুখোমুখি শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন এসিএস-

কর্পোরেট সংবাদ: ক্যারিয়ার শুরুর কথা জানতে চাই।
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: বি.আই.বি.এম, মিরপুর-১, ঢাকা থেকে জুন ২০০৪ সালে পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন্স পাশ করার পর কিছু দিন সিস্টেম রির্সোসেস লিঃ, ৪ চামেলীবাগ, শান্তিনগর, ঢাকা তে সহকারী সফটওয়্যার ইনঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করি। তারপর ঢাকা কমার্স কলেজের পরিসংখ্যান ও কম্পিউটার বিভাগে খন্ডকালীন লেকচারার হিসেবে মার্চ ১১, ২০০৬ থেকে কাজ করা শুরু করি। তারপর ডিসেম্বর ২০১৬ তে একই কলেজে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ শুরু করি। ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০০৯ থেকে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে এন.সি.সি ব্যাংকের আই.টি ডিভিশনে কাজ করা শুরু করি। নভেম্বর ২, ২০১৫ তারিখ সিনিয়র এক্সিকিউটিব অফিসার এন্ড এন্টারনাল আই.টি. অডিটর হিসেবে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এ যোগদান করি।

কর্পোরেট সংবাদ: আইসিএসবি থেকে সিএস ডিগ্রী নেওয়ার উদ্দেশ্য কী?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: একটা প্রফেশনাল ডিগ্রী নেওয়া।

কর্পোরেট সংবাদ: আইসিএসবি থেকে প্রাপ্ত সনদ আপনার কর্মজীবনে কতটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আপনি মনে করেন।
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: আইসিএসবি থেকে প্রাপ্ত সনদ আমার কর্ম পরিধি বাড়াবে। ভবিষ্যতে বোর্ড অ্যাফেয়ার্স, কর্পোরেট গভর্নেন্স, ঝুকি ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, আর্থিক প্রশাসন, আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগে কাজের সুযোগ হবে।

কর্পোরেট সংবাদ: আইসিএসবিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় কোন বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন? কেন?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: আইসিএসবিতে পড়ার সময় গুরুত্ব দিয়েছি বেশি ক্লাস লেকচার এবং বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন অ্যানালাইসিস। কারণ, প্রশ্ন প্যাটার্ন বুঝা এবং সেভাবে নিজেকে পরীক্ষার জন্য তৈরি করা।

কর্পোরেট সংবাদ: আপনার বর্তমান কর্মস্থলে সিএস ডিগ্রী কোনো পরিবর্তন আনবে বলে কী আপনি মনে করেন?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: আমি বর্তমানে ইন্টারনাল আইটি অডিটর হিসেবে কাজ করছি। আর গর্ভনেন্স ইন আইটি আমার আইটি অডিটের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সিএস ডিগ্রী কাজ করার সাহসকে বাড়িয়েছে।

কর্পোরেট সংবাদ: কর্পোরেট সেক্টরে আইসিএসবি’র ভূমিকা আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: বর্তমানে পাশ করা কোয়ালিফাইড চাটার্ড সেক্রেটারির সংখ্যা প্রায় ৬০০। কর্পোরেট জগতে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট অপ্রতুল। তবে ভাল কোয়ালিফাইড চাটার্ড সেক্রেটারি তৈরির আপ্রাণ প্রয়াস করছে আইসিএসবি ।

কর্পোরেট সংবাদ: আইসিএসবি’র কোন দিকটাকে সবচেয়ে সফল বলে আপনি মনে করেন? দুর্বল কোন দিক থাকলে সেটি কী?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: সবচেয়ে সফল মনে করি আইসিএসবির বর্তমান ও প্রাক্তন কাউন্সিল মেম্বারদের নিরলস ও নিঃসার্থ পরিশ্রম করে যাওয়া আইসিএসবির ভবিষ্যত নিয়ে। সবচেয়ে দুর্বল মনে করি সঠিক জায়গায় প্রফেশনের প্রচারে দুর্বলতা রয়েছে আইসিএসবির।

কর্পোরেট সংবাদ: সিএস কোর্স করার সময় আইসিএসবি থেকে কী কোন প্রকার তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন? হয়ে থাকলে কী?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: আলহামদুল্লিাহ। বলার মত কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই।

কর্পোরেট সংবাদ: আইসিএসবি’র সিলেবাস নিয়ে আপনি কী পুরো সন্তুষ্ট?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: জি, সন্তষ্ট। কারণ, সিলেবাস অনেক বড় এবং স্টান্ডার্ড। বাহিরের দেশের সিলেবাসের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তৈরি করা।

কর্পোরেট সংবাদ: আপনার কাছে কী মনে হয়, আইসিএসবি’র সিলেবাস পরিবর্তন করা প্রয়োজন আছে?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: এখনই না। কারণ, সিলেবাস যথেষ্ট ভাল এবং পাশের হার বাড়ানোর জন্য এর মান কমানো ঠিক হবে না।

কর্পোরেট সংবাদ: আগামী প্রজন্ম কেন আইসিএসবিতে পড়বে-এ বিষয়ে আপনার উপদেশ কী?
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: আমরা যে সেক্টরেই কাজ করি না কেন আমাদেরকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যেমন - সেক্রেটিরিয়াল প্রাকটিস, কর্পোরেট গর্ভনেন্স, ট্যাকসেশন্স, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, আর্থিক প্রশাসন মোটামুটি সব প্রফেশনেই লাগবে কোন না কোন সময়। তাই একটা প্রফশনাল ইনষ্টিটিউট এর ডিগ্রী চাকরির প্রতিযোগিতায় ও জ্ঞান অন্যের তুলনায় যে কাউকে এগিয়ে রাখবে ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া সিএস পেশা “সিএস অ্যাক্ট-২০১০” দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং এর ভবিষ্যত নি:সন্দেহে অনেক ভালো।

কর্পোরেট সংবাদ: ভবিষ্যত পরিকল্পনা।
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: একজন ভাল আইটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) নিরীক্ষক হওয়া।

কর্পোরেট সংবাদ: অসংখ্য ধন্যবাদ।
শরিফ দিলনেওয়াজ হোসেন: কর্পোরেট সংবাদকেও ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর আয়োজনের জন্য।

(আগামী পর্বে থাকছে নূরুল ইসলাম জিলানী এসিএস এর সাক্ষাত। চোখ রাখুন কর্পোরেট সংবাদের পাতায়)