কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তা শরীফ আপাতত চাকরি ফেরত পাবেন না বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে কোনো কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়া দুদক কর্মচারীকে অপসারণ করা-সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিলের বিরুদ্ধে দুদকের আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে দুদকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চাকরিতে ফিরতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহউদ্দিন দোলন, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
শুনানি শেষে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আজকের আপিল মঞ্জুরের ফলে শরীফ উদ্দিন আপাতত চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।
এর আগের শুনানিতে আপিল বিভাগ বলেন, দুদক কর্মকর্তা শরীফের চাকরিচ্যুতিতে তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন ছিল না। তবে অভিযোগ থাকলে দুদোকের চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত।
সে সময় আদালত আরও বলেন, হতে পারে দুদক কর্মকর্তা শরীফের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ আছে যার ভিত্তিতে তাকে দ্রুত চাকরিচ্যুত করেছে সংস্থাটি।
২০০৮ সালের দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুযায়ী গেল বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক।
ওই বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা দুদকের রয়েছে। এরপরই চাকরিচ্যুতি ও ৫৪(২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন শরীফ।
গত ১৩ মার্চ চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বরখাস্ত হওয়া দুদকের আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।
প্রসঙ্গগত, র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৯৪ লাখ টাকার চালান বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়ার পাশাপাশি আদালতের অনুমতি ছাড়াই ব্যাংক হিসাব বন্ধ রাখার মতো গুরুতর ৫টি অভিযোগ উঠায় চাকরিচ্যুত করা হয় দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে। এছাড়া ঘুষ না পেয়ে শরীফ হয়রানি করেছেন এমন ছয়জন লিখিত অভিযোগও করেছেন দুদকের কাছে। এসব অভিযোগের সত্যতা মেলায় শরীফকে দুদক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এছাড়া গত বছরের ১৬ জুন শরীফকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালী বদলি করা হয়। কিন্তু শরীফ কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে বদলি আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। সেই সঙ্গে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর ই-মেইলে যোগদানপত্র পাঠানো এবং আরও এক মাস পর সশরীরে যোগ দেয়াকে শরীফের দোষ হিসেবেই দেখছে দুদক।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের অন্তত ছয়জন ভুক্তভোগী চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ না পেয়ে শরীফ উদ্দিন তাদের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি হয়রানি করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেন।
চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুদক ১৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে কর্মরত উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে। তবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনের সময় শরীফের বেশকিছু অনুসন্ধান এবং পদক্ষেপ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে যায়। এ কারণে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
দুদকের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন না সেই শরীফ : আপিল বিভাগ https://corporatesangbad.com/19020/ |