কখনও ডিবি পুিলশ, কখনও সেনা সদস্য অতঃপর রিয়াদ র‌্যাবের জালে

Posted on March 12, 2023

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বিভিন্ন পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ান রিয়াদ বিন সেলিম। কখনও র‌্যাব, কখনও ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা, আবার কখনও সেনা সদস্য। কাউকে পাইয়ে দেন এস আলম গ্রুপে চাকরি আবার কাউকে টাকার বিনিময়ে মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। তিনি আসলে একজন প্রতারক। এভাবে বিভিন্ন সংস্থার নামে পরিচয়পত্র বানিয়ে লোকজন থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। ডিবি পুলিশ কর্মকর্তার গাড়িচালক থেকে তিনি হয়ে ওঠেন প্রতারক।

এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পর শুক্রবার (১০ মার্চ) সেই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। প্রতারক রিয়াদ বিন সেলিম (২৪) চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়া এলাকার মো. সেলিম উদ্দিনের ছেলে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায় নগরীর চান্দগাঁওয়ের হাজীরপোল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।

জানা গেছে, রিয়াদ পেশায় একজন গাড়িচালক। এক সময় ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ছিলেন। চাকরি করার সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে কাজ করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে এটিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। শুরুতে ডিবি অফিসার পরিচয়ে প্রতারণা শুরু করেন। পরে ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবির ভুয়া একটি পরিচয়পত্র বানায় এবং সেটি দিয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের আওতাধীন বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন।

এছাড়া তিনি কখনও ইঞ্জিনিয়ার, কখনও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সেজে সাংবাদিকদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের সুবিধা দেওয়ার কথা বলেও হাতিয়ে নিতেন টাকা।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘রিয়াদ নামের এক প্রতারক একাধিক পরিচয় ব্যবহার করা আসছিল। সর্বশেষ র‌্যাবের কর্মকর্তা সেজে ০১৭৭৭ (র‌্যাবের সরকারি নম্বর) সিরিজের একটি সিম সংগ্রহ করেন এবং ওই নম্বরের সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসের মনোগ্রাম যুক্ত করেন। পাশাপাশি ওই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ ও কন্টাক্টে AD Operations, RAB H/Q লিখে তা সেভ করেন। পরে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ওয়ারেন্ট ও মামলার কথা বলে হাতিয়ে নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিয়াদ নিজেকে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতো। আবু সুফিয়ান নামের এক ব্যক্তির অভিযোগ পেয়ে আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করি। তার বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় একটি নারী-নির্যাতনের মামলা রয়েছে।’ রিয়াদ বিন সেলিমকে চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।