মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক

Posted on March 9, 2023

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সড়কের দুই ধারে কয়েকশো মরা গাছের কারনে মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক। সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের চলা চলের সময় দেখে মনে হয় মরুভুমির দেশে এসেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের দুই ধারে কয়েকশো রেইনট্রি গাছ অজানা কারনে মারা গেছে। গাছের ডালপালা ভেঙে যে কোন সময়ে সড়কটি মরনফাঁদে পরিণত হতে পারে।

সাতক্ষীরা আশাশুনি অংশের প্রায় ২৪ কিলোমিটার ও সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ অংশের ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে মৃত গাছ ভেঙে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনার আশংকায় দিন পার করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
সাতক্ষীরা শহর থেকে আশাশুনি উপজেলা পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এই সড়কের দুই ধারে শত শত গাছ যেটা পরিবেশ ও পথচারীদের এক সময় মানুষের উপকারে আসত আজ সেই গাছই মরে যাওয়ার কারনে মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

তবে স্থানীয়দের দাবী বর্ষা মৌসুমের আগে গাছ গুলো সরকারি ভাবে বিক্রয় করা যায় তাহলে সরকারি সেখান থেকে বিপুল সংখ্যক রাজস্ব পাবে অনথ্যায় এভাবে থাকলে গাছ গুলো নষ্ট হয়ে যাবে।

প্রায় ৩০ বছর আগে শিশু গাছ বা রেইনট্রি গাছ রোপন করেন জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বছর খানেক আগে সড়কটির বেশকিছু স্থানে লম্বা লম্বা গাছগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে। তার পর একের পর এক রাস্তার দুই ধারে শত শত গাছ মারা যায়।বর্তমানে ঝড় বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে।

অনেক সময় সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক সহ বিভিন্ন যানবাহন ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হয়। সড়কটির ভালুকা চাঁদপুর, কোমরপুর, কুল্ল্যার মোড়, কাদাকাটি, বুধহাটা, সখিপুর,দেবহাটা,নলতা, কালিগঞ্জ এলাকায় দুই ধারের প্রায় সবকটি গাছই মারা গেছে। তবে এর সুনির্দিষ্ট কোন কারন জানা যায়নি।

তবে সাতক্ষীরা সামাজিক বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে পোকার আক্রমণে এসব গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এই গাছ গুলোর বয়স অনেক। কি একটা রোগ বা পোকার কারনে গাছ গুলোর মারা যাচ্ছে। ডাল ভেঙে পড়ে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। আরও জানান, যে হটাৎ একটু বাতাস হওয়ার কারনে মরা গাছের ডাল ভেঙ্গে ঘরের চালের উপরে পড়ার কারনে খুবই ভয় পেয়েছিলাম। এছাড় আমাদের বাচ্ছাদের স্কুল কলেজে যাওয়ার সময় খুবই ভয়ে থাকি য়ে কখন দূরঘটনা শিকার হয় বাচ্চারা

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউপি চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরী জানান, গাছগুলো এখন মানুষের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই নিয়ে আমি ও আমার ইউনিয়ারে জনগন খুবই আতঙ্ক আছি । মৌখিকভাবে জেলা পরিষদকে বলেছি। খুব শিগ্রই গাছ গুলো সরানোর আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সামাজিক বনবিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক নুরুন্নাহার জানান, গাছগুলো মারা যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ বনগবেষণা ইনস্টিটিউটকে জানিয়েছিলাম। একটি টিম এসে শুকনা কাঠ ও পোকার নমুনা নিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ‘লাক্ষা’ নামের এক ধরনের পোকার কারণে গাছ মারা যাচ্ছে। রিপোর্ট এলে সঠিক কারন জানা যাবে। এ ছাড়া লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।

সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারনেই গাছগুলোর খাদ্য উৎপাদন শক্তি কমে যাচ্ছে। এতে দূর্বল হয়ে গাছ গুলোতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে এতেই মারা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম আরও জানান, বেশকিছুদিন আগে জেনেছি আশাশুনি সড়কের পাশে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এক ধরণের পোকার উপদ্রবে গাছের ছাল নষ্ট হচ্ছে। গাছগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। দুটি টিম গঠন করা হয়েছে গাছ মার্কিং করার জন্য। অনতিবিলম্বে টেন্ডারের মাধ্যমে মরা গাছগুলি অপসারণ করা হবে।