পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা ব্যারেজের অধীনে ২টি খাল খনন করবে রাজ্য সরকার

Posted on March 5, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের অধীনে দুটি খাল খননের কাজ শুরু করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ বিভাগ। স্থানীয় কৃষিকাজে সহায়তার জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ পদক্ষেপের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশ।

রাজ্য সরকারের দাবি, নতুন খাল দুটি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলার লক্ষাধিক হেক্টর কৃষিজমি সেচের আওতায় আনতে সাহায্য করবে।

ব্যারেজ এলাকায় নতুন করে খাল খননের ফলে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশের পানি প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। নিজেদের উত্তরাঞ্চলে পানি সংকট নিরসনে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিস্তার পানি দাবি করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে এ চুক্তি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে আলোর মুখ দেখেনি তিস্তা চুক্তি।

শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, এখন মমতা ব্যানার্জির সরকার নিজ রাজ্যে সেচ সংযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। এর থেকে পরিষ্কার যে, নতুন দুটি খালের মাধ্যমে তিস্তার আরও বেশি পানি পশ্চিমবঙ্গে প্রবাহিত হবে। গ্রীষ্ম মৌসুমে আরও কম পানি প্রবেশ করবে বাংলাদেশে। ফলে সমস্যায় পড়তে পারে প্রতিবেশী দেশটি।

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন খাল খননের জন্য আমাদের কাছে এক হাজার একর জমি হস্তান্তর করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে একটি জাতীয় প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এখন প্রকল্পের জন্য যে অর্থ প্রাপ্য কেন্দ্রীয় সরকার তা দিচ্ছে না। তবে আমরা অর্থ না পেলেও প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করবো।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ি ব্লকের আরেকটি খাল সংস্কার করা হবে। এটি চালু হলে ব্লকের ৩২ হাজার একর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।

গ্রীষ্মের মাসগুলোতে তিস্তায় প্রায় ১০০ কিউমেক (কিউবিক মিটার পার সেকেন্ড) পানি পাওয়া যায়। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের কৃষিজমিতে সেচ দিতে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিউমেক পানি প্রয়োজন।

১৯৭৫ সালে জলপাইগুড়ি জেলার ৯ দশমিক ২২ লাখ হেক্টর কৃষিজমি সেচ সুবিধার আওতায় আনতে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প চালু করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, তিস্তা থেকে নদীর দুই তীরে খালের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে। তবে, কয়েক দশক ধরে প্রকল্পটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসছে ও মাত্র ১ লাখ ০৪ লাখ হেক্টর জমিতে পানি পৌঁছেছে।