বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর সভায় নতুন সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত নতুন সুদের হার আমানতের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ এবং ঋণের সুদ হার হবে ৯ শতাংশ যা আগামী পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এখন প্রশ্ন উঠছে সুদের নতুন হারে গ্রাহক কতটুকু লাভবান হবেন? এক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংক বলছে, সুদের হার এক অংকের নীচে নামিয়ে আনার কারণে সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। তারা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করবেন। এখন আগের চেয়ে কম টাকা সুদ হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বেশি সুবিধা হবে।
কিন্তু যারা গাড়ি, ফ্ল্যাট বা এ ধরনের কাজে ব্যাংক ঋণ নেবেন তাদেরকে বঞ্চিত হতে হবে এই সুবিধা থেকে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর বক্তব্য, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা পরে নির্ধারণ করবে যে, কোন কোন খাতে এক অংকের ডিজিট সুদ হিসেবে কার্যকর হবে। বিষয়টি এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সুদের হার কমানোর প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন । তাঁদের মতে, এটা করার কথা ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের, কোন সমিতির নয়। এছাড়া প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায় যে, ঘোষণা করা হয় সুদের হার ৯ শতাংশ, কিন্তু নানা মারপ্যাচে ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে সুদ আদায় করা হয় ১২ শতাংশ। বর্তমান কর হারে এ জিনিসটি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এছাড়া ব্যাংক মালিকদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ব্যাংকগুলো অনেক সময় নানা ভাবে চার্জ দিয়ে সুদের হার বাড়িয়ে ফেলে। তাছাড়া ব্যাংক সেক্টর প্রতিযোগিতামূলক। বর্তমানে যে মুদ্রাস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ আছে সেটা বেড়েও যেতে পারে।
নতুন সুদের হার নির্ধারণের ফলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। তাঁরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর অব্যবস্থাপনা উন্নত করা গেলে ব্যাংকের মুনাফা বাড়তো। ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয়ও অনেক বেশি। স্বচ্ছতা বাড়াতে দুর্নীতি কমালে আমানতকারীদের সুদের হার কমাতে হতোনা।
যদিও ব্যাংক মালিক বা ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ঋণের সুদের হার কমলে ব্যাংকের অলস টাকা বিনিয়োগ হবে এবং ঋণের চাহিদাও বাড়বে। আর ঋণের সুদের হার কমাতে হলে আমানতের সুদের হার কমাতে হবে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যাংকের বেশিরভাগ আমানত আসে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীর কাছ থেকেই। এখন তাদের সুদ কমলে তাঁরা বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবে এটাই স্বাভাবিক।
ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের সামান্য অর্থের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা চায় আর সেজন্যই তারা ব্যাংকে টাকা রাখতো। এখন আমানতেও সুদের হার কমানোর কারণে আমানতকারীরা বিকল্প চিন্তা করবে। তখন ব্যাংকের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
ব্যাংকের নতুন সুদের হার; বিনিয়োগকারীদের লাভ-ক্ষতি https://corporatesangbad.com/167416/ |