সবার জীবনের ঈদ হোক আনন্দময়

Posted on June 15, 2018

এক মাস সিয়াম সাধনার পর এলো ঈদ। খুশির বারতা নিয়ে মুসলমানের ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার। স্বজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। অধিক গাড়ির চাপ, রাস্তা খোড়াখুড়ি এবং ফিটনেসবিহিনী গাড়ির কারণে রাস্তার তৈরি হয় ভয়াবহ যানজট। বেড়ে যায় দুর্ভোগ। এছাড়া ঘটে দুঘর্টনা, প্রাণহানির ঘটনাও বেড়ে যায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি। প্রশাসনের দিক থেকে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া জরুরি। রাস্তার শত প্রতিকুলতাকে জয় করে তাঁদের এই ঈদ যাত্রা এবং ঈদ শেষে ঢাকা তথা কর্মস্থলে ফেরা সুন্দর হোক, আনন্দময় হোক-এই কামনা করছি।

যে অর্থ আর বার্তা নিয়ে প্রতিবছর মুসলমানদের জীবনে আসে রমজান, তাহলো আত্মশুদ্ধি অর্জন। ব্যক্তি জীবনের আত্মশুদ্ধি গড়তে পারে সুখি সমৃদ্ধ সমাজ ও রাষ্ট্র। রমজানের তাৎপর্যময় আত্মশুদ্ধি বছরের বাকি দিনগুলোতে যাতে হৃদয়ে লালন করতে পারি, আল্লাহ সবাইকে সেই তওফিক দান করুন।

রমজানের অন্যতম একটি ইবাদত যাকাত ও ফিতরা আদায়। সমাজে অর্থনৈতিক সাম্যতা বজায় রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। সামর্থ্যবানের প্রদানকৃত যাকাতের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী স্বাবলম্বী হবে-এটাই নিয়ম। কিন্তু আমাদের সমাজে দেখা যায়, কমমূল্যের শাড়ি, লুঙ্গি দেয়ার মাধ্যমে যাকাত আদায় করতে, যেটি অবশ্যই কাম্য নয় এবং ইসলাম সে শিক্ষা দেয়নি। এছাড়া ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে সামর্থ্য অনুযায়ি অর্থাৎ নিজের জীবনমান অনুযায়ি অর্থ প্রদান করাই ঈমানের লক্ষণ।

রমজানের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়ে। এ সময় বাসা-বাড়িতে বেড়ে যায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা। ফলে ঈদ শেষে বাসায় ফিরে অনেককে স্বর্বশান্ত হতে দেখা যায়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের তৎপরতা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যাতে প্রতিটি নাগরিকের জান-মাল সুরক্ষিত থাকে।

ইসলামের বিধান মোতাবেক ঈদ পালন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশে ইসলামী ফাউন্ডেশনের চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। একটি স্বাধীন দেশের ভৌগলিক সীমার মধ্যে চাঁদ দেখার বিষয়টি কমিটি নিশ্চিত করেন। নাগরিক হিসেবে আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলবো-এটাই ইসলামের শিক্ষা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশের অনেক অঞ্চলে প্রায় শতাধিক গ্রামে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেছেন, যা ধর্মের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির নামান্তর। বিষয়টিকে গুরুত্বে সাথে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। কারণ, এভাবে চলতে থাকলে ধর্ম এবং সমাজের মধ্যে বিভেদ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে যা অদূর ভবিষ্যতে অশনি ও অমঙ্গল বয়ে আনতে পারে।

আমাদের দেশের তথা পৃথিবীর সকল মুসলমানের জীবনে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই কামনা করছি। সেইসাথে কর্পোরেট সংবাদের সকল পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক সহ সকলকে জানাচ্ছি ঈদের শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক।