শেয়ারবাজার ও আর্থিক স্বাধীনতা বিষয়ে ইমরান কাদিরের বই ‘রোড টু ওয়েলথ’

Posted on February 23, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের আদ্যোপান্ত নিয়ে ‘রোড টু ওয়েলথ’ নামের বই লিখেছেন গণমাধ্যমকর্মী ও বিনিয়োগকারী ইমরান কাদির। আর্থিক স্বাধীনতা লাভের নানা উপায় নিয়েও বিস্তারতি আছে এই বইয়ে।

বইটি এরইমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে; বিশেষ করে তরুন বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের মাঝে। একুশে বইমেলার ৩৫ নম্বর প্যাভিলিয়নে জ্ঞানকোষ প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে বইটি। এছাড়া অনলাইন বুকশপ রকমারীতেও যেকেউ কিনতে পারছেন বইটি।

“শেয়ারবাজার ফাটকা বাজার, জুয়ার বাজার; এই বাজারে নাকি টাকা কামানো যায় না! সবাই ধরা খায়!”- এমন কথা দিয়ে বইটি শুরু করেছেন ইমরান কাদির। তার ভাষায়, শেয়ার বাজার নিয়ে আমাদের সমাজের প্রচলিত ধারণাগুলো এমনই। এই বই লেখার উদ্দেশ্য, প্রচলিত এই ধারণাগুলোর ব্যাপারে আমার যে দৃষ্টিভঙ্গী, সেটা পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা।

শেয়ারবাজারের গুরুত্ব তুলে ধরে ইমরান কাদির লিখেছেন, এই মুহুর্তে জনপ্রিয় ব্যবসা সাময়িকী ফোর্বসের বিশ্বের শীর্ষ একশ ধনীর তালিকায় ১৩ জন শেয়ার ব্যবসায়ী, যারা সরাসরি যুক্ত শেয়ারবাজারের সঙ্গে। এই তালিকায় অনেকেরই আবার পরোক্ষভাবে শেয়ার ব্যবসায় রয়েছে বিপুল বিনিয়োগ।

তিনি বলেন, “শেয়ারবাজার আর ১০টা ব্যবসার মতোই একটি ব্যবসা, যেটা আপনাকে জানতে হবে, শিখতে হবে। এটা হঠাৎ করেই হবে না। এজন্য প্রয়োজন হবে সময়, প্রশিক্ষণ, পড়াশোনা, জ্ঞানার্জন, লেগে থাকা আর ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার।” “আমি শেয়ার মার্কেটকে ভালোবাসি, এবং দীর্ঘ সময় এখানে টিকে আছি, সফলভাবে ব্যবসা করছি। এই বইয়ে আমি আমার নিজের কিছু গল্প, শেয়ারবাজারের কিছু প্রচলিত ধ্যানধারণা এবং সেগুলো নিয়ে আমার অভিমত, কী কী বিষয় জানা প্রয়োজন- এরকম নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।”

এই বয়ের মাধ্যমে ইমরান কদির শেয়ারবজারে বিনিয়োগকারী ও বিনিয়োগে আগ্রহীদের উৎসাহ দেওয়া ও আগ্রহ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে অনেক ভুল ধারণা, যা বিনিয়োগের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেগুলোর ব্যাপারেও ভুল ভাঙানোর চেষ্টা রয়েছে বইটিতে। বইটি পাঠকদের বিনিয়োগ-জীবনে ভূমিকা রাখতে পারবে।

মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া ইমরান কাদির আর্থিকভাবে খুব একটা অভাব না দেখলেও ভোগ-বিলাসিতা ছিল না তেমন। বাবা ছিলেন ব্যাংকার আশেপাশের বিত্তবান বন্ধুদের দেখে স্কুল-কলেজ জীবন থেকে সফল হওয়ার ইচ্ছাটা সবসময় প্রবলভাবেই কাজ করে তার মনে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই বিনিয়োগের দিতে ঝোকেন তিনি।

বইয়ে ইমরান কাদির শেয়ারবাজারে পদার্পনের গল্প, ভুল করে লস করার বিষয়, বিনিয়োগ দৃষ্টিভঙ্গী আর অতি প্রত্যাশা, পরামর্শ নেয়ার উপায়, গুজব, শেয়াবাজরের টেকনিক্যাল বিষয়- যেমন কম্পাউন্ডিং ইনভেস্টমেন্ট, মার্কেটের অংশীজন, ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস, প্রযুক্তির ব্যবহার, ট্রেড কারর উপায় ও প্রক্রিয়া, টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস, বিনিয়োগের কৌশল, মানি ম্যানেজমেন্ট, বিনিয়োগ ও আবেগ, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট, ইনভেস্টর মাইন্ডসেট, ট্রেডিং এর চেকলিষ্ট, আর্থিক স্বাধীনতা লাভেরমত বিষয়গুলোর আদ্যোপান্ত ব্যাখ্যা করেছেন।

বিষয়গুলো আলোকপাত করতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা, গবেষণা, দেশে ও বিদেশের সফল বিনিয়োকারীর কথা, গ্রাফ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার উল্লেখ করেছেন। যুক্ত করেছেন সফল ব্যক্তিদের বিভিন্ন উক্তি ও ঘটনা।

বইয়ে ইমরান কাদির বলেন, “দশটা ব্যবসার মতোই শেয়ার ব্যবসাও একটা ব্যবসা। এখানে লাভ ও ক্ষতি দুটোই হতে পারে। আর শেয়ার ব্যবসা কোনো জুয়া বা গ্যাম্বলিংও না। তাই রাতারাতি আলাদীনের চেরাগ পাওয়ার চিন্তাটাও মাথা থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত। বাজারে এসেই টাকা দ্বিগুণ বা তিনগুণ হয়ে যাবে- এই প্রত্যাশায় না থেকে ধীরে ধীরে নিজের ‘ওয়েলথ বিল্ডিং’ বা পুঁজি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”

ইমরান কাদিরের ভাষায়, অর্থ হয়তো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নয়, তবে অর্থ না থাকা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করে। আমাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, লাইফস্টাইল প্রতিটা জিনিসের জন্যই অর্থের প্রয়োজন। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং একাগ্র চেষ্টার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।

‘রোড টু ওয়েলথ’-এর বিভিন্ন দিক www.imrankadir.com -এ পাওয়া যাচ্ছে। ভবিষ্যতে শেয়ারবাজার ও আর্থিক স্বাধীনতা বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে লেখার ইচ্ছা আছে ইমরান কাদিরের।