এবার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্থার অভিযোগ

Posted on February 20, 2023

সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: ছাত্রী হেনস্থা, মানসিক হয়রানি ও শ্রেণী কক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার অভিযোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এ ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীকে মানসিক হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে ওই ছাত্রীকে শ্রেণীকক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী গত ১৮ই জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত চলছে।

ছাত্রী হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি সভাপতি পিংকি রানী দে।

লিখিত অভিযোগ পত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করা হয়েছে, আমি বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। দ্বিতীয় বর্ষ থেকে আমি বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. ফখরুল ইসলাম দ্বারা নানাভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছি। ২০২২ সালের এপ্রিলে তিনি পুনরায় চেয়ারম্যান ও প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সমস্যা আরো প্রকট হয়। তিনি মানসিক হয়রানি, হেনস্থার পাশাপশি শ্রেণীকক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন।

এক পর্যায়ে বিষয়টি ভয়ংকর রুপ ধারণ করলে আমার একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে মৌখিক ও লিখিতভাবে অবহিত করার চেষ্টা করি। কিন্তু প্রশাসন আমার অভিযোগ গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন। এমতবস্থায় আমার অভিযোগটি রেজিস্ট্রার দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা আমার সামনে জোরে জোরে পাঠ করেন এবং তা নিয়ে বিদ্রুপ ও হয়রানিমূলক প্রশ্ন করতে থাকেন।

যেখানে অভিযোগ দাখিল করা নিয়ে এত সমস্যা সেখান থেকে সমাধান প্রাপ্তি সম্ভব হবে হবার নয়। একারণে বিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি সভাপতি বরাবর অভিযোগটি দাখিল করি।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারী,) সকালে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি সভাপতি পিংকি রানী দে বলেন, গত ১৮ই জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্থা, মানসিক হয়রানি ও শ্রেণীকক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার অভিযোগে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি এবিষয়ে কাজ করছে। বিষয়টি তদন্তের আওতায় রয়েছে যে কারণে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।

হেনস্থার শিকার ওই ছাত্রী বলেন, বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলাম আমাকে দীর্ঘদিন হলো হেনস্থা, মানসিক হয়রানি ও শ্রেণীকক্ষে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলে আসছিলেন। এবিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশানকে একাধিকবার অভিযোগ করতে গেলেও তারা আমার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি বরাবর অভিযোগ করি। এর পর থেকে ফখরুল স্যারকে রক্ষা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধকল্প কমিটি আমার অভিযোগটি গ্রহণ করেছেন। গতকাল (১৮ ফেব্রুয়ারী) প্রতিরোধকল্প কমিটি আমাকে অভিযোগের প্রমানপত্র নিয়ে আসতে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার কারনে আমি যেতে পারিনি। আমার পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীর অভিযোগ সত্য নয়। সে পরীক্ষার হলে নকল করছিলো। আমি নকল করতে বাঁধা দেই, একারণে সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে,। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।