কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয় এখানে এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বার্তায় গণপ্রজাতন্ত্রের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে তাকে নির্বাচিত করার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অভিনন্দন জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন এবং জাতিসংঘ সনদ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অজর্নে সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২৭নং আইন) এর ধারা ৭ এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি ১২ এর উপ-বিধি (৬) অনুসারে নির্বাচনী কর্তা ও নির্বাচন কমিশনার এর ঘোষণা মোতাবেক জনাব মো. সাহাবুদ্দিন, পিতা-মরহুম শরফুদ্দিন আনছারী, বাসা/হোল্ডিং-৮৮/১, গ্রাম/রাস্তা: শিবরামপুর, পাবনা পৌরসভা, ডাকঘর-পাবনা, পোস্ট কোড-৬৬০০, উপজেলা-পাবনা সদর, জেলা-পাবনা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হইয়াছেন।’
এর আগে, দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের নাম ঘোষণা করেন।
সিইসি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে একজনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। আর কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় এবং মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ থাকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। আগামী ২৩ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। তার উত্তরসুরি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনীত করার একক ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া হয়।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হতে হয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। আর সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। যেহেতু অন্যকোনো দল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করার বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই। এবারও আওয়ামী লীগ যাকে মনোনীত করবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।
উল্লেখ্য, পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হয়। যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য।
সাহাবুদ্দিন চুপপু ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুইবার বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হন। পেশাগত জীবনে প্রথম দিকে সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি পাবনা প্রেসক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির জীবন-সদস্য।
দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংকের কথিত পদ্মাসেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করা সাহাবুদ্দিন চু্পপু অভিযোগটি মিথ্যা ও অন্তঃসারশূন্যতা প্রমাণে সমর্থ হন। তার দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন কানাডা কোর্ট কর্তৃক সমর্থিত হয়।
১৯৭২ সালের ১৬ নভেম্বর পাবনা শহরের দিলালপুর নিবাসী আলী আকতারের জ্যেষ্ঠ কন্যা ড. রেবেকা সুলতানার সঙ্গে সাহাবুদ্দিন চুপপু বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে যুগ্ম-সচিব হিসেবে ২০০৯ সালে অবসরে যান। তিনি বর্তমানে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্চ প্রোগ্রাম বিভাগের অধ্যাপক এবং ফ্রেন্ডস ফর চিলড্রেন অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। চুপপু-রেবেকা দম্পতির একমাত্র সন্তান মো. আরশাদ আদনান (রনি) দেশে ও বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে প্রাইম ব্যাংকের উচ্চপদে কর্মরত।
আরও পড়ুন:
দেশের তৈরী পোশাক শিল্পের জন্য নতুন বাজার খোঁজার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শ্রুতিকটু বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের গেজেট ৬ মাসের মধ্যেই: প্রতিমন্ত্রী
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে জাতিসংঘের অভিনন্দন https://corporatesangbad.com/13114/ |