সেই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের নামে দুদকের মামলা

Posted on February 13, 2023

বেনাপোল প্রতিনিধি : ঢাকা বিমানবন্দরে ২৩ লাখ টাকাসহ আটক বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সেই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খন্দকার মুকুল হোসেনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ঘটনার ৬ মাস পর রোববার দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল আমিন মামলাটি করেন।

গত বছরের ২৬ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা খন্দকার মুকুল হোসেনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বেনাপোল কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনি টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার কাকড়াজান গ্রামের খন্দকার আহসান হাবীবের ছেলে।

মামলা সূত্র মতে, খন্দকার মুকুল হোসেন ২০১০ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ঢাকাতে ক্যাশিয়ার পদে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে উত্তীর্ণ হন। তিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে বেনাপোল কাস্টম হাউজে যোগদান করেন। যোগদানের পর বেনাপোল বন্দরের ৩১ নম্বর ওয়েব্রিজসহ অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সাধারণ পূর্ত শাখায় দায়িত্বপালন করতে থাকেন। এখানে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন।

২০২২ সালের ২৬ আগস্ট সকালে মুকুল হোসেন ঢাকার উদ্দেশে যশোর বিমানবন্দরে আসেন। বোডিং পাসের সময়ে বন্দরের স্ক্যানিং মেশিনে তার বহনকৃত ব্যাগে বিপুল পরিমাণ টাকার উপস্থিতি পায় নিরাপত্তকর্মীরা।

যশোর বিমানবন্দর থেকে বিষয়টি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মুকুলের ব্যাগ তল্লাশি করে ২২ লাখ ৯৯ হাজার টাকার উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসবাদে মুকুল টাকার উৎস বলতে পারেননি। তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার ও অন্যান্য মালামাল বেনাপোল কাস্টম হাউজে প্রেরণ করে। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্তকরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনা জানতে পেরে যশোরের দুদক কর্মকর্তারা বেনাপোল কাস্টমসে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু টাকার উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন তিনি। এ বিষয়ে দুদক প্রধান কার্যালয়ে মামলা করার অনুমতি প্রার্থনা করা হয়। অনুমতি পাওয়ার পর রোববার এ মামলা করা হয়েছে।

দুদকের যশোর সমন্বতি জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল-আমিন বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়মিত মামলার করার আবেদন জানান। কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ায় দুদক কার্যালয়ে এ মামলা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এ মামলার নথি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তকালে এ ঘটনার সাথে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রমাণ পেলে তাদেরেকও এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুকুল বর্তমানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক। যদি আটকের প্রয়োজন মনে হয় তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।