মহান বিজয়ের ৪৬ বছর পূর্ণ হলো। বাঙালি জাতি ও জনগণের বড় ও শ্রেষ্ঠ অর্জন এই বিজয়। বাংলাদেশের ইতিহাস হলো স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষের সুদীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস। এ দেশের মানুষ লড়াই করেছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। দেশীয় সামরিক-বেসামরিক স্বৈরাচার ও লুটেরা শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে। জনগণের সংগ্রামের মুখেই একদিন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ চলে গেলেও আমাদের ওপর চেপে বসল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শাসন ও শোষণ। মূলত পাকিস্তানের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান ছিল শোষিত-বঞ্চিত এবং অবহেলিত। শিক্ষা, পেশা, আয় সবদিক থেকেই শোষণ করা হতো পূর্বাঞ্চলকে। ফলে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, পরিবহন, অবকাঠামো ব্যবস্থাসহ সবকিছুই ছিল পশ্চাৎপদ। দেশের এই অবস্থাকে ধীরে ধীরে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর দেখা স্বপ্ন ছিল শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশকে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে এনে দেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নকে ঘাতকের বুলেটে থমকে দেওয়া হয়। সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় থমকে যায়। কিন্তু ধাপে ধাপে দেশ আজ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। বিজয়ের ৪৬ বছরে প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। অবশ্য প্রাপ্তিও কম নয়। তবে প্রাপ্তির তুলনায় প্রত্যাশা অনেক বেশি। আর এ কারণে বিজয়ের দিনে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণটা সামনে আসছে আমাদের।
সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ খুব বেশি অগ্রসর কিংবা অগ্রগতির স্বাদ না পেলেও এগিয়ে চলেছে ধাপে ধাপে। বর্তমানে আমাদের দেশের কতগুলো অর্থনৈতিক টার্গেট ঘোষণা করা হয়েছে। তা হলো আমরা ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হব।
সারা বিশ্ব এখন বাংলাদেশের এগিয়ে চলা মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ করছে। কেবল বড় বড় প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়া নয়, এ দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা আজ উচ্চারিত হচ্ছে। ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে, টেকসই উন্নয়নের জন্য সূদূর প্রসারী কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে, সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে; আর অগ্রগতির অংশীদারি করার জন্য সারা বিশ্বের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে বর্তমান সরকার। সব মিলে বিজয় দিবসে এ দেশের অর্জনগুলো তুলে ধরার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দিকে তাকাতেই হবে।
বিজয় দিবসে প্রত্যাশা, অর্থনৈতিকভাবে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাক। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশসহ ‘নেক্সট ইলেভেন’ সম্মিলিতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০৫০ সালে প্রবৃদ্ধির বিচারে বাংলাদেশ পশ্চিমা দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠিত হবে সুখী, সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ।
বিজয়ের এই দিনে কর্পোরেট সংবাদের অগণিত পাঠক, বিজ্ঞাপনা দাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
বিজয়ের দিবসের প্রত্যাশা https://corporatesangbad.com/119933/ |